দেখতে যাওয়ার কথা ছিলো রাত্রি সাড়ে আটটায়। কিন্তু অন্য কলে আটকে যাওয়ায় এবং আগের ভিজিট গুলো করে সেটা দেরি হয়ে যাবে আমরা বুঝেছিলাম। তাই দেরি হবে সেটা আগেই জানিয়ে দেওয়া হয়েছিল। তবুও ৬ থেকে ৭ বার ফোন করেছেন কখন আসছি আমরা জানতে। সত্যিকথা বলতে কি খুব বিরক্ত বোধ করছিলাম আমরা। যদিও এবারই প্রথম নয়। যখনই যে সময়ই দেওয়া হোক না কেন, উনি ৪/৫ বার ফোন করবেনই। এটা আমরা জানি। বিনা কারণে টেনশন করা ওঁনার স্বভাবজাত। যাকে চিকিৎসা বিজ্ঞানের ভাষায় বলা হয় আ্যনজাইটি ডিসঅর্ডার। অথচ পৌঁছনোর পর প্রথমে দারুণ বিরক্তি, তারপর ধীরে ধীরে স্বাভাবিক হয়ে আসা। আর তারপর সংকোচ করতে করতে গেয়েই শোনালেন এই গান। বুঝতে পারলাম যতই না করুক মনে মনে কিন্তু খুব খুশি হয়েই শোনালেন গানটি। তারপর পুরোপুরি মুড চেঞ্জ। যখন ওঁনাকে দেখে যখন বিদায় নিচ্ছি তখনও অন্য একটা গান গেয়ে চলেছেন…
এটাই জেরিয়াট্রিক চিকিৎসার একটা অন্যতম দিক। এখানে চিকিৎসা মানে শুধু প্রেসার, পালস, স্যাচুরেশন মাপা, বুকে স্টেথো লাগিয়ে খস খস করে প্রেসক্রিপশনে কিছু নিদান দেওয়া নয়। তার অনেক বাইরে। চিকিৎসককে হতে হবে ঘরের ছেলে বা মেয়ে। সময় দিতে হবে একটু। সেটারই যে আজকাল বড্ড অভাব। তবে হ্যাঁ, ‘বাঁচবো’ র চিকিৎসকরা সেই ছেলে মেয়ে হতে পেরেছে অনেকের…
আমাদের এই ৮৪ বছরের তৃপ্তি মাসিমা কিন্তু এক সময়ের ডাকসাইটের ফিজিক্সের অধ্যাপিকা ছিলেন। বহু দিন দক্ষতার সাথে নিজের শয্যাশায়ী স্বামীকে পরিচর্যাও করে গেছেন। উনিও আমাদের মেম্বার ছিলেন।
গানটা কেমন লাগলো জানাবেন কিন্তু…